চট্টগ্রাম জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় চট্টগ্রাম জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি।

চট্টগ্রাম জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি:-

ইসলামি চিন্তাবিদ:

মুফতি ফয়জুল্লাহ

মুফতি ফয়জুল্লাহ (১৮৯০–১৯৭৬) ছিলেন একজন বাংলাদেশি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, মুফতি, কবি, শিক্ষাবিদ ও সংস্কারক। ফতোয়া প্রদানে দক্ষতার কারণে তাকে মুফতি আজম বা বড় মুফতি বলা হয়। তিনি হাটহাজারী মাদ্রাসার শুরুর দিকের ছাত্র ছিলেন। পরবর্তীতে দারুল উলুম দেওবন্দে লেখাপড়া সমাপ্ত করে শিক্ষকতা শুরু করেন। তিনি হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রধান মুফতি ছিলেন। ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তিনি আসহাবে সুফফার আদলে মেখল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি আরবি, ফার্সি ও উর্দুতে প্রায় ১০০টি গ্রন্থ রচনা করেছেন।

শাহ আহমদ শফী

শাহ আহমদ শফী (আল্লামা শফী নামেও পরিচিত; ৫ এপ্রিল ১৯৩০ – ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০) একজন ইসলামি পণ্ডিত এবং একবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে বাংলাদেশে ইসলামি নবজাগরণের প্রতীক। তাকে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য আলেম হিসেবে বর্ণনা করা হয়। একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় শাহবাগ আন্দোলন, নাস্তিক্যবাদ সহ ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী শক্তির বিপরীতে ইসলামপন্থী নেতা হিসেবে তার উত্থান ঘটে।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর হিসেবে ২০১৩ সালে তিনি খোলা চিঠি প্রদানের মাধ্যমে সরকার এবং জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, যার ধারাবাহিকতায় ১৩ দফা দাবি উত্থাপন, লংমার্চ এবং ঢাকা অবরোধের মাধ্যমে গড়ে ওঠা গণমানুষের প্রতিরোধ আন্দোলনের তিনি অবিসংবাদী নেতায় পরিণত হন। ২০১০ সালে তিনি এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন এবং আমৃত্যু তিনি সংগঠনটির আমীর ছিলেন। তার সুপারিশে বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আনা হয় এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবীর মূর্তি অপসারণ করা হয়।

১৯৮৬ থেকে ৩৪ বছর তিনি দারুল উলুম হাটহাজারীর মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন এবং বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সভাপতি ছিলেন। তার নেতৃত্বে ২০১৮ সালে কওমি মাদ্রাসার সরকারি স্বীকৃতি অর্জিত হয়। এজন্য গঠিত বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশন এবং কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশের তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

 

চট্টগ্রাম জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি
চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রি – চট্টগ্রাম জেলা

 

জুনায়েদ বাবুনগরী

মুহাম্মদ জুনায়েদ (যিনি জুনায়েদ বাবুনগরী নামে অধিক পরিচিত) (৮ অক্টোবর ১৯৫৩ – ১৯ আগস্ট ২০২১) ছিলেন একজন বাংলাদেশি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক, ইসলামি বক্তা ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব। তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক আমীর, দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব ও শায়খুল হাদিস, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি, চট্টগ্রাম নূরানী তালীমুল কুরআন বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং মাসিক মুঈনুল ইসলামের প্রধান সম্পাদক ছিলেন।

এছাড়াও তিনি নাজিরহাট বড় মাদ্রাসার মুতাওয়াল্লী, মাসিক দাওয়াতুল হকের পৃষ্ঠপোষক, ইনসাফ২৪.কম ও কওমিভিশন.কমের প্রধান উপদেষ্টা সহ কয়েকটি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের নেতৃস্থানীয় পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার অনুসারীরা তাকে ‘মজলুম জননেতা’, ‘কায়েদে মিল্লাত’, ‘আপোষহীন সিপাহসালার’ ইত্যাদি উপাধিতে ডেকে থাকে।

তিনি পাকিস্তানের বিখ্যাত ইসলামি ব্যক্তিত্ব ইউসুফ বিন্নুরীর শিষ্য। মুসলিম নেতা হিসেবে তিনি দেশব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয়। তিনি ২০১৩ সালের হেফাজত আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে কারাবরণ করেছিলেন। জুুুনায়েদ বাবুনগরী হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীরের দায়িত্ব পালনকালে ১৯ আগস্ট ২০২১ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন।

 

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

সৈয়দ মুহাম্মদ আজিজুল হক

সৈয়দ মুহাম্মদ আজিজুল হক একজন সুফি সাধক, মুফতি, ইসলামি চিন্তাবিদ ও বাংলাদেশের আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের ইমাম। তিনি ইমাম শেরে বাংলা নামে অধিক পরিচিত।

আজিজুল হক আল কাদেরী

ওবাইদুল হক নঈমী

মুফতি মোহাম্মদ ওবায়দুল হক নঈমী (জন্ম: ১১ মার্চ ১৯৪৩ – মৃত্যু: ৬ জুলাই ২০২০) ছিলেন বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ইসলামি পণ্ডিত, শিক্ষাবিদ ও সংগঠক। তিনি শেরে মিল্লাত হিসাবেও অধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি ছিলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসার শায়খুল হাদীস।

সৈয়দ মুহাম্মদ অছিউর রহমান

সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান একজন বাংলাদেশি ইসলামী পণ্ডিত, মুফতি, মুহাদ্দিস, মুফাসসির, শিক্ষাবিদ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি চট্টগ্রামের ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত বাংলাদেশের কো-চেয়ারম্যান।

জালালুদ্দিন আল কাদেরী

আল্লামা জালালুদ্দীন আল কাদেরী (১৯৪৪-২০১৬) ছিলেন একজন বাংলাদেশি আলেম, শিক্ষাবিদ, অধ্যক্ষ, খতিব ও সংগঠক। তিনি চট্টগ্রামের খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস ছিলেন। এবং তিনি এই মাদ্রাসায় ৩৩ বছর ধরে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে ৩০ বছর যাবত খতিবের দায়িত্ব পালন করেছেন।

 

চট্টগ্রাম জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি
পরৈকোড়া জমিদার বাড়ি – চট্টগ্রাম জেলা

 

নুরুল ইসলাম হাশেমী

আল্লামা কাজী নুরুল ইসলাম হাশেমী (জন্ম: ২৮ ডিসেম্বর ১৯২৮ – মৃত্যু: ২ জুন ২০২০) বাংলাদেশের একজন ইসলামি শিক্ষাবিদ, আলেম ও ধর্মপ্রচারক। তিনি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সভাপতি ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। এছাড়াও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র সেনা প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকা ছিলো। তিনি বটতল আহসানুল উলুম জামেয়া গাউসিয়া কামিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে অবস্থান করেছিলেন, এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন মাদ্রাসায় রাজাকারদের ক্যাম্প তৈরি করতে বাধাপ্রদান করেছিলেন

মুসলেহ উদ্দিন

আল্লামা মুসলেহ উদ্দিন বাংলাদেশি একজন আলেম, অধ্যক্ষ ও ইসলামি গবেষক ছিলেন। তিনি জামাতে আহলে সুন্নত বাংলাদেশের মহাসচিব ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা ও চট্টগ্রাম ছোবহানিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ছিলেন। মুসলেহ উদ্দিন ফতোয়া-ইসলামি আইন, রাজনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ছিলেন। এছাড়াও তিনি উর্দু, আরবি, ফার্সি ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষ ছিলেন। তার জ্ঞানের পরিসরের জন্য তিনি এই যুগের ইমাম গাজ্জালী নামে প্রসিদ্ধ লাভ করেছিলেন। তার কর্ম ও স্মৃতি নিয়ে আলোচনার জন্য চট্টগ্রামে অধ্যক্ষ আল্লামা মুসলেহ উদ্দিন (রহ.) ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে।

সংগীত শিল্পী:

আইয়ুব বাচ্চু

বাংলাদেশের ক্রিকেটের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ও ব্যক্তিত্ব চট্টগ্রাম থেকে এসেছে। যেমন: আকরাম খান, আফতাব আহমেদ, ইরফান শুক্কুর, তামিম ইকবাল, নাজিমউদ্দিন, নাফিস ইকবাল, নূরুল আবেদীন নোবেল, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু,নাঈম হাসানইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বি

নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ;মুহাম্মদ ইউনূস

সাবেক সেনা প্রধান;মঈন উদ্দিন আহমেদ

রাজনীতিবিদ;মেজর মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীরপ্রতীক

আরও পড়ূনঃ

Leave a Comment